ফারুক আহমদ, উখিয়া::
আরডিআরএস বাংলাদেশ নামক একটি এনজিও সংস্থা উখিয়ায় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির নামে লক্ষ লক্ষ টাকা অপচয় করছে বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে । ২০২১ সালে বিভিন্ন প্রজাতির ৫৩ হাজার চারা রোপণ করলেও বর্তমানে কোথায়ও চারার অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে না। এ বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের দাবি জানিয়েছেন নাগরিক সমাজ।
আরডিআরএস বাংলাদেশে এনজিওর টিম লিডার হাফিজুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনিও অকপটে স্বীকার করে বলেন গতবছর অর্থাৎ ২০২১ সালে রোপনকৃত ৫৩ হাজার চারার মধ্যে কেবল ৫ থেকে ১০ ভাগ চারার অস্তিত্ব পাওয়া যাবে । অবশিষ্ট চারা নেই বললে চলে।
পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের দাবী, নামে মাত্র লোক দেখানো বৃক্ষরোপণ নামে আরডিআরএস বিদেশী দাতা সংস্থার টাকা লুটপাট করেছে । দুর্বল চারা ক্রয়, রোপণকৃত গাছের চারায় ইউরিয়া সার, টিএসপি, জৈব সার দেওয়ার কথা থাকলেও তা না দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা তছরুপ করছে।
এ বছরও অর্থাৎ ২০২২ সালে ৭৮ হাজার চারা রোপণের নামে বৃক্ষরোপণের কাজ শুরু করেছে এ সংস্থাটি । প্রতিটি গাছের চারা রোপন থেকে শুরু করে সর্বসাকুল্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৯০ টাকা। এতে মোট ব্যয় হবে কোটি টাকার উপরে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে প্রকাশ, সুইজারল্যান্ডের দাতা সংস্থা এল. ডাব্লিউ. এফের অর্থায়নে আরডিআরএস বাংলাদেশ নামক এনজিও সংস্থা উখিয়া, রামু মহেশখালী ও কক্সবাজার সদরে বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছেন।
খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, গেল বছর ৫৩ হাজারের মধ্যে ৩৬ হাজার হোস্ট কমিউনিটিতে ও ১৭ হাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিভিন্ন প্রজাতির চারা রোপন করা হয় । অনুরূপভাবে চলতি বছর ৭৮ হাজার চারা রোপণের টার্গেট নিয়েছে । তন্মধ্যে হোস্ট কমিউনিটি তে ৫৩ হাজার ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ১৯ হাজার। চারার মধ্যে রয়েছে বনজ ফলজ ও ঔষধি গাছ।
অভিযোগে প্রকাশ , গেল বছর উখিয়ার রত্নাপালং ও হলদিয়া পালং ইউনিয়নের বিভিন্ন রাস্তার ধারে লোক দেখানো অল্প সংখ্যক চারা রোপণ করে বিদেশী দাতা সংস্থার টাকা লুটপাট করেছে । কোন সড়কে একটি গাছের চারাও নেই । তদন্ত করলে গতবছরের রোপনকৃত কোন চারার খোজ পাওয়া কঠিন হবে।
নাগরিক সমাজের অভিমত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তদারকি এবং আরডিআরএস বাংলাদেশ নামক এনজিও সংস্থার জবাবদিহিতা না থাকায় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির নামে লুটপাটের বিষয়টি ধামা চাপা পড়ছে।
এ প্রসঙ্গে যোগাযোগ করা হলে আরডিআরএস বাংলাদেশ এর টিম লিডার মোঃ হাফিজুর রহমান বলেন গেল বছর বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির নামে ৫৩ হাজার চারা রোপণ করা হলেও পদ্ধতিগত ক্রুটি কারণে সফলতার মুখ দেখেনি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রোপণকৃত চারা গুলো মোটামুটি বেচে থাকলেও রাস্তার ধারে মাত্র ৫ থেকে ১০ ভাগ চারা বেচে আছে । তিনি আরো বলেন চলতি বছর রাস্তার ধারে ফেন্সি দিয়ে অর্থাৎ বাশের ঘেরা দিয়ে চারা রোপণ করা হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ , গতবছর ৫৩ হাজার চারা রোপণের কথা থাকলেও লোক দেখানো অল্প সংখ্যক চারা রোপণ করে কর্মসূচি সমাপ্ত করেন । দেয়া হয়নি সার, গোবর, টিএসপি ও জৈব সার। যার ফলে বিদেশী দাতা সংস্থার টাকাগুলো নয় ছয় করে আরডিআরএস কর্মকর্তারা পকেট ভারি করেন।
এনজিও সংস্থার মাঠ পর্যায়ের অফিসার বশির উল্লাহ জানান চলতি বছর চারা রোপন কাজে স্থানীয়দেরকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে । তিনিও গতবছরের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির পদ্ধতি ক্রটির ছিল বলে স্বীকার করেন ।
আরডিআরএস বাংলাদেশ কতৃক বৃক্ষরোপণের নামে গেল বছর ৫৩ হাজার ও চলতি বছর ৭৮ হাজার চারা কোথায় কিভাবে রোপণ করা হয়েছে তা উচ্চ পর্যায়ে তদন্ত করে অনিয়ম দুর্নীতি ও অর্থ লুটপাটের বিষয়টি উদঘাটন করার জন্য সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানিয়েছেন সচেতন নাগরিক সমাজ।
২০১৭ সালে মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী আশ্রয় নেয় কক্সবাজারে। বাংলাদেশের ...
পাঠকের মতামত